Class 10 নদীর কাজ দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ (প্রশ্ন ও উত্তর)
Class 10 নদীর কাজ দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ (প্রশ্ন ও উত্তর) | Class 10 Geography | Madhyamik Geography (class 10)
1.নদী কাকে বলে?
Ans: নদী হল একটি স্বাভাবিক প্রবাহমান জলধারা যা পার্বত্য অঞ্চল বা উচ্চভূমিতে বৃষ্টির জল, বরফ গলা জল অথবা প্রস্রবনের জল থেকে উৎপন্ন হয়ে অভিকর্ষিত টানে ভূমির ঢাল অনুসারে উৎস থেকে একটি নির্দিষ্ট খাত বরাবর প্রবাহিত হয়ে অন্য কোন বড় নদী, জলাশয় হ্রদ বা সমুদ্র পতিত হয়।

জলপ্রবাহ অনুসারে নদীকে দুটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়- i.নিত্যবহ নদী ii.অনিত্যবহ নদী
যেসব নদী হিমবাহ গলা জলে পুষ্ট ও নদীতে সারা বছর জল থাকে তাদের নিত্যবহ নদী বলে I
যেসব নদী বৃষ্টির জলে পুষ্ট ফলে সারা বছর জল থাকে না তাদের অনিত্যবহ নদী বলে I
2.নদী অববাহিকা বলতে কী বোঝ? উদাহরণ দাও।
Ans: একটি প্রধান নদী তার উপনদী ও শাখা নদী গুলি যতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে রয়েছে সেই সমগ্র অঞ্চলকে নদী অববাহিকা বলে।
আমাজন নদীর অববাহিকা পৃথিবীর বৃহত্তম নদী অববাহিকা।
গঙ্গা নদীর অববাহিকা ভারতের বৃহত্তম অববাহিকার উদাহরণ।
3.জলবিভাজিকা কাকে বলে?
Ans: যে উচ্চভূমি দুই বা ততোধিক নদী গোষ্ঠীকে বা অববাহিকা পরস্পর থেকে পৃথক করে সে উচ্চভূমিকে জলবিভাজিকা বলে।
ভারতের প্রধান জলবিভাজিকা হল হিমালয় পর্বত।
উত্তর দক্ষিণ ভারতের নদীগুলির জলবিভাজিকা হল বিন্ধ্য পর্বত।

4.ধারণ অববাহিকা বলতে কী বোঝো?
Ans: নদীর উৎস অঞ্চলের অববাহিকা ধারণ অববাহিকার নামে পরিচিত। অর্থাৎ নদীর জল সংগ্রহের এলাকা।
5.দোয়াব কি?
Ans: দো=দুই, অব= অববাহিকা অর্থাৎ দুটি নদীর মধ্যবর্তী স্থানকে দোয়া বলে। গঙ্গা ও যমুনা দোয়াব ভারতের বৃহত্তম দোয়াব।
6.নদীর ক্ষয়কার্যের প্রক্রিয়া গুলি কি কি
Ans: 1.জলপ্রবাহ ক্ষয়: নদীতে দ্রুত জল প্রবাহের ফলে নদীর খাতে যে ক্ষয় হয়।
- অবঘর্ষ ক্ষয়: নদীবাহিত শিলাখণ্ডের সাথে নদী খাতের সংঘর্ষে ফলে যে ক্ষয় হয়।
- ঘর্ষণ ক্ষয়: নদীবাহিত ছোট বড় শিলাখণ্ডগুলি পরস্পরের মধ্যে ঘর্ষণে যে ক্ষয় হয়।
- দ্রবন ক্ষয়: নদীর জলের রাসায়নিকভাবে বিয়োজিত এবং দ্রবীভূত হয়ে যে ক্ষয় ঘটে।
- বুদবুদ ক্ষয়: নদীর জলস্রোতের সাথে যে বুদবুদ থাকে ,সেই বুদবুদের চাপে নদী গর্ভের শিলাস্তর ক্ষয়প্রাপ্ত হওয়াকে বুদবুদ ক্ষয় বলে।
7.নদীর বহনকার্যের প্রক্রিয়া সম্বন্ধে আলোচনা কর।
Ans: 1.ভাসমান প্রক্রিয়া: জলপ্রবাহের ফলে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভাসমান বালি কাদাকনা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ভেসে প্রবাহিত হওয়ার প্রক্রিয়া।
- আকর্ষণ প্রক্রিয়া: নদীর স্রোতের টান বা আকর্ষণে উপত্যকার তলদেশ দিয়ে শিলাখন্ডের গড়াতে গড়াতে এগিয়ে যাওয়া কে আকর্ষণ প্রক্রিয়া বলে।
- লম্ফদান প্রক্রিয়া: নদীর স্রোতের টানে কিছু শিলাখন্ড নদী খাতে ধাক্কা খেয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে যে প্রক্রিয়ায় এগিয়ে চলে।
- দ্রবণ প্রক্রিয়া: নদীর জলে দ্রবীভূত অম্লের প্রভাব লবণ, জিপসাম, ক্যালসিয়াম জাতীয় শিলাস্তর দ্রবীভূত অবস্থায় এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পরিবাহিত হওয়ার প্রক্রিয়া।
8.ষষ্ঠ ঘাতের সূত্র বলতে কী বোঝো?
Ans: নদীর গতিবেগ দ্বিগুণ বৃদ্ধি হলে তার বহন ক্ষমতা (2)⁶ অর্থাৎ 64 গুন বৃদ্ধি পায় নদীর গতিবেগের সাথে বহন ক্ষমতা এই সম্পর্ককে ষষ্ঠ ঘাতের সূত্র বলে।
1842 সালে এই সূত্রের ব্যাখ্যা দেন W.Hopkins.
9.কে ষষ্ঠ ঘাতের সূত্রের ব্যাখ্যা দেন?
Ans: ডাব্লিউ হপকিন্স , 1842 সালে এই সূত্রের ব্যাখ্যা দেন ৷
10.সঞ্চয় বা অবক্ষেপণ প্রক্রিয়া বলতে কী বোঝো?
Ans: নদীর গতিবেগ হ্রাস গতিপথের ঢাল হ্রাস বস্তুর ভারের পরিমাণ বৃদ্ধি প্রভৃতি কারণে নদীর বহন ক্ষমতা হ্রাস পায় ফলে নদীর বস্তুভার বা অতিরিক্ত বোঝা নদীর তলদেশে কিংবা উপত্যাকার বিভিন্ন অংশে সঞ্চিত হয় একে নদীর অবক্ষেপন বলে ৷
11.কিউসেক ও কিউমেক কি
Ans: নদীর জলপ্রবাহের পরিমাপের একক হল কিউসেক ও কিউমেক I
নদীর একটি নির্দিষ্ট অংশ দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে যত কিউবিক ফুট জল প্রবাহিত হয় তাকে কিউসেক ( কিউবিক ফুট/ সেকেন্ড)
নদীর একটি নির্দিষ্ট অংশ দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে যত কিউবিক মিটার জল প্রবাহিত হয় তাকে কিউমেক বলেI ( কিউবিক মিটার/ সেকেন্ড)
12.নদীর জল প্রবাহের গতি মাপক যন্ত্রের নাম কী
Ans: কারেন্টমিটার I এই যন্ত্রের উদ্ভাবক হলেন- R.Woltmann
13.নদী উপত্যকা (River Valley) কী?
উত্তর: উৎস থেকে মোহনা পর্যন্ত গতিপথে উপনদী, মূলনদী ও শাখানদীর জল যে নির্দিষ্ট ও ক্ষুদ্র খাতের মধ্যে দিয়ে নিম্নদিকে প্রবাহিত হয়, তাকে নদী উপত্যকা বলে। অববাহিকার তুলনায় এটি আয়তনে ক্ষুদ্র। আর্দ্র মরশুমে উপত্যকায় নদীর জলতলের উচ্চতা বৃদ্ধি পায় এবং শুষ্ক মরশুমে তা হ্রাস পায়।
14.আদর্শ নদী (Ideal River) কী?
উত্তর: যে প্রধান নদী উৎস থেকে মোহনা পর্যন্ত প্রবাহপথে উচ্চ, মধ্য ও নিম্ন গতি-এই তিন অবস্থা সুস্পষ্ট তাকে সাধারণভাবে আদর্শ নদী বলে।যথা-গঙ্গা, সিন্ধু নদী।
3 Marks Question Answer 👇
Q1. বদ্বীপ এর শ্রেণীবিভাগ কর I
Ans: আকৃতি অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকারের হয় I যথা-
i.ধনুকাকৃতি ব-দ্বীপ:
প্রধান নদী ও শাখা নদীর মিলনস্থলে শাখা নদীবাহিত পলি সমূহ সঞ্চিত হয়ে ধনুকাকৃতি ব-দ্বীপ গঠন করে সমুদ্রের সম্মুখবর্তী অংশ ধনুকের মত বেঁকে থাকে ৷যেমন গঙ্গা নদী , পো নদী ,নীল নদের বদ্বীপ ধনুকাকৃতি ব-দ্বীপ এর উদাহরণ |
2.কাসপেট বা তীক্ষ্ম / করাতের দাঁতের মতো বদ্বীপ:
যেসব ব-দ্বীপের নদীর মোহনা টি সমুদ্রের দিকে করাতের দাঁতের মতো তীক্ষ্ণ অগ্রভাগের মতো এগিয়ে থাকে তাকে তীক্ষ্ণাগ্র বদ্বীপ কাসপেট বদ্বীপ বলে ইতালির তাইবার স্পেনের এব্রো I
3.পাখির পায়ের মতো বদ্বীপ:
নদী সমুদ্রে বহুদূর পর্যন্ত বাহিত হয়ে পাখির পায়ের আকৃতি বদ্বীপ সৃষ্টি করে ৷ সমুদ্র তরঙ্গের তুলনায় নদীর শক্তির পরিমাণ বেশি হলে পাখির পায়ের মতো ব-দ্বীপ গঠিত হয় ৷
মিসিসিপি নদীর বদ্বীপ ভারতের কাবেরী নদীর বদ্বীপ সিন্ধু কৃষ্ণা নদীর বদ্বীপ I
Q2.ভারতের পশ্চিম বাহিনী নদী গুলিতে বদ্বীপ গড়ে ওঠেনি কেন?
Or, সব নদীর মোহনায় বদ্বীপ গড়ে ওঠেনি কেন ?
Or,বদ্বীপ গড়ে ওঠার শর্ত
Or,বদ্বীপ সৃষ্টির অনুকূল ভৌগলিক পরিবেশ
Ans: সব নদীতে ব-দ্বীপ গঠিত হয় না কারণ বদ্বীপ গঠনের কিছু শর্ত আছে I যথা-
i.নদীর স্রোতের বেগ:
নদী মোহনায় স্রোতের বেগ কম থাকলে পার্বত্য প্রবাহে নদীর বাহিত নুড়ি, কাঁকড় ,বালি নদী মোহনায় সঞ্চিত হয়ে বদ্বীপ গঠন করবে ৷
ii.নদীর দৈর্ঘ্য ও উপনদীর সংখ্যা:
নদী যত দৈর্ঘ্য বেশি হবে তত ক্ষয় কার্যের সুযোগ সুবিধা বাড়বে এবং ক্ষয়জাত পদার্থের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে ৷ এছাড়া উপনদীর সংখ্যা বেশি হলে জলের পরিমাণ বেশি ক্ষয় কার্য বেশি হবে (পশ্চিম বাহিনী অধিকাংশ নদী গুলো ছোট ও উপনদীর সংখ্যা কম )
iii.পলল রাশির পরিমানের আধিক্য:
পলি, বালি, কাদার যোগান নদী মোহনায় বিপুল পরিমাণ থাকলে তা সঞ্চিত হয়ে বদ্বীপ গড়ে ওঠার সম্ভাবনা বাড়ে ৷
iv.অগভীর সমুদ্র:
মোহনার কাছে সমুদ্রের গভীরতা কম হলে নদীর পলল রাশির দ্বারা তা তাড়াতাড়ি ভরাট হয়ে ব-দ্বীপ গঠিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ৷কঙ্গো নদী তার দীর্ঘ গতিপথে প্রচুর পলি বহন করলেও সমুদ্রের গভীরতা অনেক বেশি বলে এর মোহনায় বদ্বীপ গড়ে উঠতে পারেনি ৷
v.সমুদ্র জলের লবনতা:
নদী সমুদ্রে প্রবেশ করলে নদীর পললরাশি সমুদ্রের লবণাক্ত জলের সংস্পর্শে এসে থিতিয়ে পড়ে ৷ যেখানে সমুদ্রের জল যত বেশি লবণাক্ত সেখানে নদীবাহিত পললরাশি দ্রুত থিতিয়ে পড়তে দেখা যায়
vi.স্রোতের বিপরীতে বায়ুপ্রবাহ:
স্রোতের বিপরীতে বায়ুপ্রবাহ জল প্রবাহের গতি রোধ করবে ফলে নদীর স্রোতের বেগ কমে আসার জন্য নদীবাহিত পদার্থ সমূহ সঞ্চয়ের প্রবনতা বাড়বে যা বদ্বীপ গঠনের সাহায্য করবে ৷
vii.জোয়ার ভাটার তীব্রতা:
জোয়ার ভাটার তীব্রতা কমলে সমুদ্রস্রোতের প্রাবল্য কম হয় যা বদ্বীপ গঠনের সাহায্য করে ৷
সমুদ্র ও স্থল ভাগ দ্বারা বেষ্টিত কিংবা উন্মুক্ত নয় ,সেই সকল ক্ষেত্রে মোহনায় বদ্বীপ গঠনের সুবিধা হয়
5 Marks Question Answer 👇
Q1. নদীর ক্ষয় কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ 👉Click Here
Q2. নদীর সঞ্চয় কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপ 👉Click Here
Please Share